ভুঁড়ি কমানোর উপায়
ভুঁড়ি কমানোর উপায়
আজকাল
অনেক মানুষের
দিকে তাকালে
যেটা সবচেয়ে
বেশি চোখে
লাগে সেটা
হলো তাদের
বিশাল পেট | অনেকের ই মুখ শুকনো কিন্তু পেট বড় | শুনতে হাস্যকর
মনে হলেও
এর ফলাফল
কিন্তু সুখকর
না! পুরুষদের
ক্ষেত্রে ৩৯.৫ এবং মহিলাদের
ক্ষেত্রে ৩৫.৫ ইঞ্চির বেশি
পেট এর সাইজ থাকলে হার্ট
এর অসুখ,
ডায়বেটিস হতে পারে | তাছাড়া এই বিশাল পেট আপনার
এত সাধের
চেহারায় ফেলে
বিরূপ প্রভাব,
অতএব সময়
থাকতে চলুন
এখানে একটু
মনোযোগ দেয়া
যাক। ভূরি
কমানোর উপায়গুলো-
কাউকে
দেখেই
হুট
করে
বলে
দেয়া
যায়
না,
যে
তার
ভুঁড়ি
হয়েছে। ভুঁড়ি
মাপতেও
আছে
কিছু
ভুঁড়ি
পরিমাপক উপায়!
পূর্ণবয়স্ক পুরুষের জন্যঃ
প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের কোমরের
মাপ
৯৪
সেন্টিমিটার বা
৩৭
ইঞ্চি
পর্যন্ত স্বাভাবিক যদি
তার
উচ্চতা
কম
হয়।
আর
লম্বা
পুরুষের ক্ষেত্রে কোমরের
মাপ
১০২
সেন্টিমিটার বা
৪০.২ ইঞ্চি পর্যন্ত স্বাভাবিক।
মহিলাদের ক্ষেত্রেঃ
কোমরের
মাপ
৮০
মেন্টিমিটার বা
৩১.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত স্বাভাবিক ধরা
যেতে
পারে।
তবে
মহিলাদের কোমরের
মাপ
৮৮
সেন্টিমিটার বা
৩৪.৬ ইঞ্চি থেকে
বেশি
হলে
অত্যন্ত সতর্ক
হতে
হবে।
ভুঁড়ির উৎপত্তিস্থল ও কারণঃ
শরীরে
অতিরিক্ত চর্বি
জমার
ফলে
মানুষ
মোটা
হয়
বা
ভুঁড়ি
হয়।
ফ্যাট
সেল
বা
চর্বি
কোষ
আয়তনে
বাড়ে
তখন
শরীরে
চর্বি
জমে।
পেটে,
নিতম্বে, কোমরে
ফ্যাট
সেল
বেশি
থাকে।
অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য
দেহে
চর্বি
জমে,
আবার
যে
পরিমাণ
খাওয়া
হচ্ছে
বা
দেহ
যে
পরিমাণ
ক্যালরি পাচ্ছে
সে
পরিমাণ
ক্ষয়
বা
ক্যালরি খরচ
হচ্ছে
না
এই
কারণেও
দেহে
মেদ
জমতে
পারে।
এগুলো
শোনার
বা
জানার
পর
অনেকে
হয়তো
বলবেন
যে
তারা
যথেষ্ট
সঠিক
পরিমাণে খাদ্য
গ্রহণের পরও
ওজন
বেশি।
তাদের
অভিযোগ
সঠিক।
বংশগত কারণেও মানুষ মোটা হতে পারে। ‘ওব জিন’ নামের এক ধরনের জিন থাকে ফ্যাট সেলের মাঝে। এরা
লেপটিন
নামের
এক
রকম
হরমোন
তৈরি
করে।
লেপটিন
আমাদের
মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে দেহে
জমে
থাকা
চর্বির
পরিমাণ
জানিয়ে দেয়।
হাইপোথ্যালামাস নিউরোপেপটাইড ওয়াই
নামে
এক
রকম
উৎসেচকের মাধ্যমে মস্তিষ্কের ক্ষুধা
নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রকে উত্তেজিত করে
আমাদের
ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
জিনগত
ত্রুটির কারণে
যদি
লেপটিন
হরমোন
কম
থাকে
তাহলে
ক্ষুধা
বেড়ে
যায়।
এর
ফলেও
দেহে
মেদ
বৃদ্ধি
পায়।
আবার
যাদের দেহে ব্রাউন এডিপোজ টিস্যু বেশি থাকে তারা মোটা হয় না। এছাড়া
থাইরয়েড হরমোন
মেদ
কম
বা
বৃদ্ধির সাথে
জড়িত,
থাইরয়েড হরমোন
বৃদ্ধি
পেলে
রোগী
প্রচুর
খাবে
কিন্তু
ওজন
বাড়বে
না।
আবার
থাইরয়েড হরমোন
কমে
গেলে
ওজন
বৃদ্ধি
পায়।
মদ্যপান, অতিরিক্ত ঘুম,
মানসিক
চাপ,
স্টেরয়েড এবং
অন্য
নানা
ধরনের
ওষুধ
গ্রহণের ফলেও
ওজন
বাড়তে
পারে।
আপনার ভুঁড়ির বদৌলতে যেসব সমস্যা হতে পারেঃ
# ভুঁড়ির কারণে
আপনাকে
যথেষ্ট
দৃষ্টিকটু লাগে।
কোনো
পোশাকেই ভালো
দেখায়
না।
বয়সের
তুলনায় বয়স্ক
দেখায়,
হতে
পারেন
ভুঁড়ি
টিজিং
এর
শিকার!


# বাড়তি ওজন
কিংবা
ভুঁড়ি
নিয়ে
অনেক
সমস্যা। বাড়তি
ওজনের
জন্য
যে
কোনো
ধরনের
হৃদরোগ
হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়া
রক্তনালীতে চর্বি
জমে
নানা
সমস্যার সৃষ্টি
হয়।
বাড়তি
ওজন
রক্ত
চাপেরও
কারণ।
# ডায়াবেটিস টাইপ
টু
দেখা
দিতে
পারে
মেদ
বৃদ্ধির জন্য।
# মেদবহুল ব্যক্তির জরায়ু,
প্রস্টেট এবং
কোলন
ক্যান্সারের সম্ভাবনা শতকরা
পাঁচ
ভাগ
বেশি।
# ওজন বৃদ্ধির সাথে
সাথে
হাঁটাচলা করতে
সমস্যা
হয়।
হাঁটুর
সন্ধিস্থল, কার্টিলেজ, লিগামেন্ট ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
আর্থারাইটিস, গেঁটে
বাত
এবং
গাউট
হওয়ার
সম্ভাবনাও বেড়ে
যায়।
# অতিরিক্ত চর্বি
থেকে
পিত্তথলিতে পাথর
হওয়ার
সম্ভাবনা বেড়ে
যায়।
# অতি ওজন
এবং
ভুঁড়ির জন্য
যৌনক্ষমতা কমে
যেতে
পারে।
পুরুষের শুক্রাণু কমে
যেতে
পারে
এবং
মহিলাদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে
পারে।
আসেন এবার ভুঁড়ি কমাইঃ
বিশাল
আকারের
ভুঁড়ি
নিয়ে
অনেকে
দিব্যি
বসে
আছেন।
কিংবা
আরামে
সাধের
ভুঁড়িতে হাত
বুলাচ্ছেন। তবে
ভুঁড়ি
সংক্রান্ত বিপদগুলোতে যদি
একটুও
আতঙ্কিত হয়ে
থাকেন
তাহলে
আসেন
এবার
প্রতিরোধ করি,
পেট এর ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিতঃ করতে পারেন
পেটের
ব্যায়াম। সপ্তাহে ৩
দিন
(এক
দিন
পর
পর)পেটের ব্যায়াম ই
যথেষ্ট
| এর
বেশি
করবেন
না
| পেটের
মাসেল
এ
বেশি
চাপ
দিবেন
না
| পেটের
ব্যায়াম করার
সময়
ধীরে
ধীরে
দম
নিবেন
এবং
ছাড়বেন | |উপরে
উঠার
সময়
দম
ছাড়বেন , নিচে
নামার
সময়
দম
নিবেন
|ঘাড়ের
মাসেল
এ
যেন
চাপ
না
পড়ে
| পেটের
ব্যায়াম করার
সময়
আপনার
posture যেন
ঠিক
থাকে
| পেটের
ব্যায়াম করার
সময়
পেটের
মাসেল
গুলোর
ঠিক
মত
ব্যায়াম হচ্ছে
কিনা
তা
নজর
দিন
|
প্রতিটি ব্যায়াম ১৫-২০ বার করে
তিন
সেট
করবেন
| প্রতিটা ব্যায়াম আস্তে
আস্তে
করবেন
| তাড়া
হুড়ো
করবেন
না
|পুরা
শরীরের
ব্যায়াম গুলো
করলে
পেটের
ও
আশে
পাশের
মাসেল
গুলো
র
ব্যায়াম হবে
|পেটের
জনপ্রিয় একটি
ব্যায়াম হলো
crunch | এটা
ছাড়া
ও
yoga, pilates , ধরনের
ব্যায়াম গুলো
করতে
পারেন
| Oblique এবং
টুইস্ট
ও
ভালো
| আরেকটি
খুব
ভালো
পেটের
ব্যায়াম হলো
reverse crunch | এছাড়া
cardio dance , kickboxing, stepper, ইত্যাদি কার্ডিও ব্যায়াম গুলো
পেট
কমাতে
করতে
পারেন
| শুধু
হাটলে
বা
কার্ডিও করলে
জীবনেও
পেট
এর
শেপ
নরমাল
বা
flat হবে
না|
আবার
শুধু
পেট
এর
ব্যায়াম করলেও
কিন্তু
হবে
না,
কার্ডিও করতেই
হবে
| কার্ডিও করার
সময়
পেট
ভেতরের
দিকে
টেনে
রাখবেন
|
সঠিক ডায়েটঃ আপনি পেটের
ব্যায়াম করলেন,
আর
বেশি
বেশি
খেলেন,
তাহলে
কিন্তু
হবে
না
| ব্যালান্স ডায়েট
করতে
হবে
, বারে
বারে
অল্প
অল্প
খেতে
হবে
বা
portion control করতে
হবে
| Junk/fast food, মিষ্টি
খাবার
বাদ
দিতে
হবে
| ক্যালরি মেপে
খাবার
খেতে
হবে
|কম
ক্যালরি যুক্ত
খাবার,
ফল,
সালাদ,
আঁশ
জাতীয়
খাবার,
সবজি
খেতে
হবে
বেশি
বেশি
| প্রচুর
পানি
ও
খেতে
হবে
| ভাত,
সাদা
আটা
, আলু,
পাস্তা
বা
নুডুলস
ইত্যাদি কম
খেতে
হবে
বা
বাদ
দিতে
হবে
| অতিরিক্ত ভাত
বা
শর্করা
খাবার
খাওয়ার ফলে
বাঙালিদের পেট
বেড়ে
যায়
|
জীম এ যেতে পারেনঃ সেখানে আপনি
পেটের
ব্যায়াম এর
সম্পূর্ণ গাইড
পাবেন
| এছাড়া
সেখানে
অনেক
মেশিন
আছে
যেগুলো
পেটের
ব্যায়াম এর
জন্য
ভালো
| পেটের
ব্যায়াম এর
কিন্তু
শেষ
নেই
|পেটের
ব্যায়াম এর
সাথে
oblique, waist line এর
ও
ব্যায়াম করতে
হবে
|কি
ভাবে
পেটের
ব্যায়াম করবেন
তা
জেনে
বুঝে
করা
ভালো
| এছাড়া
যাদের
ব্যাক
পেইন
আছে
তারা
অনেক
পেটের
ব্যায়াম ই
করতে
পারবেন
না
| তাই
বুঝে
শুনে
করবেন
|
আপনার posture ঠিক করুনঃ সঠিক posture এর অভ্যাস
না
করলে
পেট
ফোলা
ফোলা
দেখাবে
| যখন
বসবেন
না
দাড়াবেন , সোজা
হয়ে
থাকবেন
| আপনার
মেরুদন্ড যেন
সোজা
অবস্থায় থাকে
|দাড়ানোর সময়
পা
থেকে
মাথা
পর্যন্ত যেন
টান
টান
(বেশি
নয়
) বা
একদম
সোজা
থাকে
| যেমন,
কান
দুটো
কাঁধ
বরাবর,
কাধ
কোমর
বরাবর,
কোমর
হাঁটু
বরারবর
, হাটু
পায়ের
পাতা
বরাবর
থাকবে
| বসার
সময়
কোমর
পর্যন্ত টান
টান
থাকবে
| আপনার
কাঁধ
এর
সামনের
দিকে
বা
চেস্ট
পেছন
দিকে
টান
টান
থাকবে
| দাড়ানো বা
বসার
সময়
পেট
ভেতরের
দিকে
টেনে
রাখবেন|এই ভাবে অভ্যাস
করুন
| উল্টা
পাল্টা
ভাবে
দাড়ানো বা
বসা
বাদ
দিন|
ফিতা দিয়ে মাপুনঃ আপনার
পেট
এর
মাপ
(উপরে
উল্লেখিত) বিপদ
জনক
পর্যায় আছে,
নাকি
উন্নতি
হচ্ছে
তা
জানতে
সপ্তাহে একটি
নির্দিষ্ট দিনে
ফিতা
দিয়ে
মাপুন
| খেয়াল
করুন
কেমন
পরিবর্তন হচ্ছে
|একটি
নোটবুকে লিখে
রাখতে
পারেন
এবং
পরবর্তিতে তা
দেখে
বুঝতে
পারবেন
কি
রকম
উন্নতি
হচ্ছে
ধীরে চলুনঃ অধৈর্য হবেন
না
, কোনো
কিছুর
ফল
ই
তাড়া
তাড়ি
আসে
না
| ধৈর্য
ধরুন
ও
লেগে
থাকুন
| কমপক্ষে দুই
থেকে
চার
সপ্তাহ
লাগতে
পারে
পেট
কমা
শুরু
করতে|
এটা
অবশ্য
অনেক
কিছুর
উপর
নির্ভর
করে
| যেমন:
আপনার
বয়স,
খাদ্যাভাস, কোন
ধরনের
ব্যায়াম করেন
ইত্যাদি র
উপর
|
হেলদি লাইফ স্টাইল মেনে চলুনঃ যেমন, সময়
মত
খাওয়া,
ঘুমানো
, মদ
বা
সিগারেট না
খাওয়া
, রাতে
ঘুমানোর তিন
ঘন্টা
আগে
খাওয়া
, নিয়মিত শরীর
চর্চা
করা
, বেশি
বেশি
না
খাওয়া
ইত্যাদি ।
সপ্তাহে একদিন অন্য রকম খানঃ প্রতিদিন নিজেকে
বঞ্চিত
করবেন
না,
সপ্তাহে একদিন
প্রিয়
খাবার
খান,
তাহলে
আপনার
হজম
প্রক্রিয়া ঠিক
থাকবে,
আপনার
শরীর
সব
রকমের
খাবার
হজম
করতে
পারবে
| হতে
পারে
সেটা
বাইরের
খাবার,
বিরিয়ানি বা
মিষ্টি
|
# নিয়মিত হাঁটা
সবচেয়ে ভালো
ব্যায়াম। প্রতিদিন নিয়ম
করে
এক
ঘণ্টা
হাঁটতে
পারলে
খুবই
ভালো।
সাইকেল
চালানো
এবং
সাঁতার
কাটাও
খুব
ভালো
ব্যায়াম। ভুঁড়ি
কমাতে
কিছু
আসনের
সাহায্য নেয়া
যেতে
পারে।
এদের
মাঝে
ত্রিকোণ আসন,
একপদ
উত্থান
আসন,
পবন
মুক্তাসন। পশ্চিমোন্থনাসন খুবই
কার্যকর।
# চর্বি জাতীয়
খাবার,
মাখন,
তেল,
গরু,
খাসির
গোশত
এগুলো
খাওয়া
থেকে
বিরত
থাকতে
হবে।
সবচেয়ে ভালো
হয়
কেউ
যদি
ওজন
কমাতে
চান
তবে
ডায়াবেটিশিয়ান এবং
চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
কেননা
ওজন
কমাতে
গিয়ে
অসুস্থ
হয়ে
গেছেন
এমনটাও
কিন্তু
হয়।
# মেদ ভুঁড়ি
যেখানে
এত
সমস্যা,
সেখানে
আগে
থেকেই
সতর্ক
হওয়া
প্রয়োজন। মেদ
জমতে
শুরু
করার
প্রারম্ভেই সতর্ক
হয়ে
জরুরী
পদক্ষেপ নিতে
হবে।
# প্রতি সপ্তাহে অন্তত
একবার
ওজন
নিলে
ভালো।
আবার
হঠাৎ
ওজন
বৃদ্ধি
অসুখের
লক্ষণ,
তেমনটা
হলে
অবশ্যই
চিকিৎসকের সাথে
যোগাযোগ করবেন।
উপরের
নিয়ম
গুলো
মেনে
চললে
আপনার
পেট
কমতে
বাধ্য
| সঠিক
নিয়মে
খাওয়া
আর
শরীর
চর্চাই
হলো
পেট
কমানোর
আদর্শ
নিয়ম
|
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন